ধর্মেও আছি আবার জিরাফেও আছি। এই সংষ্কৃতি হলো এই বঙ্গে ছেপেমের মহৎ দান। বিবেকানন্দ সন্ন্যাস নিয়েছিলেন তাতে তাঁর মহৎ উদ্দেশ্য থাকতেই পারে। কিন্তু একজন হিন্দু বা মুসলিম বা খ্রিস্টান ধর্মের পথিকৃত যদি তাঁর ধর্ম অনুসারে চলেন তা বিজ্ঞানকেই অস্বীকার করে প্ৰতিষ্ঠা হওয়া অর্থাৎ বিজ্ঞান বিরোধী প্রগতিবিরোধী।
তাই ধর্মের মধ্যেই দ্বন্ধ প্রকট হতে বাধ্য নতুন নতুন উৎপাদনের হাতিয়ারের উদ্ভবের সাথেই সাথেই। তাই নতুন অর্থনীতি নতুন সংস্কৃতির জন্ম দেয়। সেই অনুসারে ধর্মের মধ্যেই অন্তরকলহ জেগে ওঠে। নতুন বেরিয়ে আসতে চায় পুরোনোর গর্ভ হতে।
এমনিতে ধর্ম বা ধর্ম গুরু দের কোনো মার্ক্সবাদী বা কোনো প্র্গতশীল বুর্জোয়ারাও কখনও গ্রহণ করতে পারেন না?
কিন্তু ধর্মের মধ্যেকার সংস্কার আন্দোলন ও কোনো প্রগতিশীল বিপ্লবকে মার্ক্সবাদীরা বিচার করেন শ্রদ্ধার সাথেই।
বিবেকানন্দ পরিষ্কার একজন হিন্দু ধর্মের সমস্ত ধর্মীয় সংস্কারকে স্বীকার করে নেওয়া ব্যক্তি। যদিও তাঁর মধ্যে দোদুল্যমানতা লক্ষ করা গেছে যেন তিনি নিজেই স্ববিরোধী হয়ে উঠেছেন তাঁর নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই।
যেমন একদিকে তিনি শংকরাচার্জকেই এক নৃশংস হত্যাকারী হিসেবে প্রতিভাত করেছেন যিনি বৌদ্ধ শিষ্যদের হত্যা করেছেন আগুনে পুড়িয়ে আবার সেই তিনি ব্রাহ্মণ্যবাদের চালাকির সূত্র ধরে" বুদ্ধকে শিবের অবতার", হিসেবে ঘোষণা করছেন।
এই বিবেকানন্দ সতীদাহ প্রথার সমর্থন করেছেন। সেই বিবেকানন্দ প্রগতিশীল?
আপনি কাকে বেছে নেবেন,যুবকদের আইকন হিসেবে?
যে ভগত সিং তীব্র নিন্দা করেছেন যুবক যুবতীদের ঈশ্বরনির্ভরতার তাঁদের, তার জন্য কাপুরুষ আখ্যা দিয়েছেন।
তাঁকে কি তবে অস্বীকার করছেন?
আমরা মার্ক্সবাদ রা ধর্মমাত্র পরিত্যাজ্য জ্ঞান করি আবার চৈতন্য দেবের ভক্তি আন্দোলন এর বিপুল প্রশংসা করি কারন তিনি ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন ভারতের প্রগতির পথে বাধা কাস্টবাদকে ধংস করতে চেয়েছিলেন। যদিও তাঁর আন্দোলন ছিল অহিংস। কিন্তু বাংলায় বাঙালির একদা প্রগতিশীল ভূমিকার পেছনে এই আন্দোলনের ঐতিহাসিক ভূমিকা আছে এটা কি অস্বীকার করতে পারেন?
বিবেকানন্দ কী বলছেন?
তিনি বলছেন চৈতন্যদেব সমস্ত বাঙালিকেই নিরামিষাশী করে নপুংসক বানিয়েছেন। বাঙালিকে লড়াই বিমুখ করে তুলেছেন ইত্যাদি।
তিনি, কিন্তু চৈতন্যের ইতিবাচক লড়াই সম্পর্কে একটি উচ্চবাচ্য করলেন না কারণ তাঁর লড়াই হলো ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধী।
বরং তাঁর শুধু নেতিবাচক দিকটি তুলে ধরলেন অর্থাৎ অহিংস আন্দোলনের ধারাকেই।
ইংরেজদের তৈরি ভারতবর্ষে কৃষক আন্দোলনে তাঁর একটি বাক্য ব্যয় হয়েছে কোনওদিন কোনওমুহূর্তে?
মাথায় রাখবেন বিদ্রোহ কখনো ধর্মীয় আন্দোলনের মধ্যে দিয়েও শোভা পেতে পারে। কৃষক বিদ্রোহে সন্যাসী আন্দোলন বা ফকির আন্দোলন একসময়ে তাঁদের চিহ্ন রেখেছিল।
তাই একজন সন্যাসী বলেই তিনি এইসব ইংরেজবিরোধী ও জমিদারবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে নীরব ছিলেন এমন অজুহাত শোভা পায় না। তিনি কিন্তু একটি রাও কখনো কারেননি, কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে।
কেন বলুন তো?